‘পীর’ শব্দটি ফার্সি শব্দ। এই শব্দ কুরআন হাদীসে নেই। এর অর্থ আরবীতে ‘শাইখ’ বা বাংলায় ‘মুরুব্বী’ হতে পারে। অর্থাৎ এমন ব্যক্তি বিভিন্ন প্রয়োজনে যার পরাদর্শ গ্রহণ করা হয়। পীর ধরার ব্যাপারে আমাদের দেশে নানারকম ভ্রান্ত ধারণা আছে। যেমন বলা হয়ে থাকে, ‘পীর ধরা ফরজ’, ‘পীর তার মুরীদকে জান্নাতে নিয়ে যাবে’, ‘তাযকিয়া বা আত্মশুদ্ধির জন্য পীরের বাইয়াত নেয়া আবশ্যক’, ‘যার পীর নেই তার পীর শয়তান’ বা ‘পীর আল্লাহর নিকট সুপারিশ করবে’ ইত্যাদি ভ্রান্ত ধারণাগুলো কুরআন হাদীস সমর্থিত নয়। বানোয়াট কথাবার্তা।
মূলত, একজন মুসলিম হিসেবে আমাদেরকে সর্বাগ্রে আল্লাহর নির্দেশিত পথ তথা কুরআন ও সুন্নাহকে প্রাধান্য দিতে হবে। মহান আল্লাহ বান্দার প্রতি অসীম দয়ালু, তিনি সর্বজ্ঞাত ও সর্বশ্রোতা। আল্লাহর নিকট কিছু চাওয়ার জন্য বা দোয়া কামনার জন্য কোনো ব্যক্তিবিশেষের মাধ্যম গ্রহণের প্রয়োজন হয় না। কুরআন-সুন্নাহ বাদ দিয়ে কোনো পীরের বা কোনো ব্যক্তির অন্ধ অনুসরণ করা যাবে না। তবে কোনো ব্যক্তি যদি ঈমান ও আমলের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে, কিছু না জানলে জানার উদ্দেশ্যে ভাল কোনো আলেম যার কুরআন হাদীসের ব্যাপারে সম্যক জ্ঞান আছে বা কোনো আল্লাহ ওয়ালা, নেককার ব্যক্তির সংশ্রব গ্রহণ করতে চায় তা পারবে। কিন্তু ব্যক্তির কথা ততক্ষণ মানা যাবে যতক্ষণ কুরআন ও সুন্নাহ সমর্থিত হয় এর বিপরীত হলে মানা যাবে না। কুরআন সুন্নাহর একনিষ্ঠ অনুসরণই আমাদের মুক্তির জন্য যথেষ্ঠ। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন-
﴿ وَمَنْ يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَخْشَ اللَّهَ وَيَتَّقْهِ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْفَائِزُونَ ٥٢﴾
‘যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের হুকুম মেনে চলে, আল্লাহকে ভয় করে এবং তার নাফরমানী করা থেকে দূরে থাকে তারাই প্রকৃত সফলকাম।’ (সুরা নুর: ৫২)
আল্লাহ সুব. আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন ও কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী চলার তৌফিক দান করুন।