রুকইয়াহর প্রসিদ্ধ কমন আয়াতসমূহ

রুকইয়া শর’ইয়াহ হচ্ছে কুরআন এবং সুন্নাহ দ্বারা আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া এবং রোগমুক্তির জন্য প্রার্থনা করা। এটি শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতার জন্য একটি শক্তিশালী উপায়। এই পোস্টে আমরা রুকইয়ার কিছু প্রসিদ্ধ এবং কার্যকরী আয়াত নিয়ে আলোচনা করব, যা প্রায় সব ধরনের সমস্যায় ব্যবহার করা যায়। চলুন, দেখে নিই কোন আয়াতগুলো এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি উপকারী।

---

সুরা আল-ফাতিহা

(আরম্ভ করছি) পরম করুণাময় অসীম দয়াময় আল্লাহর নামে।

যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক আল্লাহরই জন্য। (১)

যিনি পরম করুণাময় অতি দয়ালু। (২)

যিনি প্রতিফল দিবসের মালিক। (৩)

আমরা কেবল তোমারই ‘ইবাদাত করি এবং কেবলমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি। (৪)

আমাদেরকে সরল সঠিক পথ প্রদর্শন করুন। (৫)

তাদের পথ, যাদের প্রতি তুমি অনুগ্রহ করেছ। (৬)

তাদের পথ, যারা গযবপ্রাপ্ত (ইয়াহূদী) ও পথভ্রষ্ট (খ্রিস্টান) নয়। (৭)

---

সুরা আল-বাকারা

আলিফ, লাম, মীম। (১)

এটা ঐ (মহান) কিতাব যাতে কোন সন্দেহ নেই, মুত্তাকীদের জন্য পথ নির্দেশ। (২)

যারা গায়বের প্রতি ঈমান আনে, নামায কায়িম করে এবং আমি যে জীবনোপকরণ তাদেরকে দিয়েছি তা থেকে তারা ব্যয় করে। (৩)

আর তোমার প্রতি যা নাযিল হয়েছে ও তোমার পূর্বে যা নাযিল হয়েছে তাতে তারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং পরকালের প্রতিও তারা নিশ্চিত বিশ্বাসী। (৪)

তারাই তাদের প্রতিপালকের হিদায়াতের উপর প্রতিষ্ঠিত আছে, আর তারাই সফলকাম। (৫)

এবং সুলায়মানের রাজত্বকালে শয়ত্বানরা যা পাঠ করত, তারা তা অনুসরণ করত, মূলতঃ সুলায়মান কুফরী করেনি বরং শয়ত্বানরাই কুফুরী করেছিল, তারা মানুষকে যাদু শিক্ষা দিত এবং যা বাবিলের দু’জন ফেরেশতা হারূত ও মারূতের উপর পৌঁছানো হয়েছিল এবং ফেরেশতাদ্বয় কাউকেও (তা) শিখাতো না যে পর্যন্ত না বলত, আমরা পরীক্ষা স্বরূপ, কাজেই তুমি কুফরী কর না,এতদসত্ত্বেও তারা উভয়ের নিকট হতে এমন জিনিস শিক্ষা করতো, যদ্বারা তারা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ সৃষ্টি করতো, মূলতঃ তারা তাদের এ কাজ দ্বারা আল্লাহর বিনা হুকুমে কারও ক্ষতি করতে পারত না, বস্তুতঃ এরা এমন বিদ্যা শিখত, যদ্দ্বারা তাদের ক্ষতি সাধিত হত আর এদের কোন উপকার হত না এবং অবশ্যই তারা জানত যে, যে ব্যক্তি ঐ কাজ অবলম্বন করবে পরকালে তার কোনই অংশ থাকবে না, আর যার পরিবর্তে তারা স্বীয় আত্মাগুলোকে বিক্রয় করেছে, তা কতই না জঘন্য, যদি তারা জানত! (১০২)

তোমাদের উপাস্য হচ্ছেন এক আল্লাহ, তিনি ছাড়া সত্যিকারের কোন উপাস্য নেই। তিনি পরম করুনাময়, অতি দয়ালু। (১৬৩)

নিশ্চয়ই আকাশসমূহ ও পৃথিবীর সৃষ্টির মধ্যে, রাত ও দিনের বিবর্তনের মধ্যে, লোকের উপকারী দ্রব্যাদিসহ সমুদ্রে চলাচলকারী জলযানের মধ্যে এবং আকাশ হতে আল্লাহর বর্ষিত সেই পানির মধ্যে যদ্বারা তিনি পৃথিবীকে- মরে যাওয়ার পর আবার জীবিত করেন এবং তাতে সকল প্রকার জীব-জন্তুর বিস্তারণে এবং বাতাসের গতি পরিবর্তনের মধ্যে এবং আকাশ ও ভূমন্ডলের মধ্যস্থলে নিয়ন্ত্রিত মেঘপুঞ্জের মধ্যে বিবেকসম্পন্ন লোকেদের জন্য নিদর্শনাবলী রয়েছে। (১৬৪)

আল্লাহ, তিনি ছাড়া সত্যিকারের কোন উপাস্য নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সর্বদা রক্ষণাবেক্ষণকারী। তাঁকে তন্দ্রা ও নিদ্রা স্পর্শ করে না। আকাশমন্ডলে ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, তাঁরই। কে সেই ব্যক্তি যে তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর নিকট সুপারিশ করে? তিনি লোকদের সমুদয় প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য অবস্থা জানেন। পক্ষান্তরে মানুষ তাঁর জ্ঞানের কোনকিছুই আয়ত্ত করতে সক্ষম নয়, তিনি যে পরিমাণ ইচ্ছে করেন সেটুকু ছাড়া। তাঁর কুরসী আকাশ ও পৃথিবী পরিবেষ্টন করে আছে এবং এ দু’য়ের রক্ষণাবেক্ষণ তাঁকে ক্লান্ত করে না, তিনি উচ্চ মর্যাদাশীল, মহান। (২৫৫)

রসূল (সাঃ) তার প্রতিপালকের পক্ষ হতে যা তার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তাতে ঈমান এনেছে এবং মু’মিনগণও। তারা সবাই আল্লাহর উপর, তাঁর ফেরেশতাদের উপর, তাঁর কিতাবসমূহের উপর এবং রসূলগণের উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছে, (তারা বলে), ‘আমরা রসূলগণের মধ্যে কারও ব্যাপারে তারতম্য করি না’ এবং তারা এ কথাও বলে যে, ‘আমরা শুনেছি এবং মেনে নিয়েছি। হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে ক্ষমা কর আর প্রত্যাবর্তন তোমারই দিকে’। (২৮৫)

আল্লাহ কোন ব্যক্তির উপর তার সাধ্যের অতিরিক্ত কিছু আরোপ করেন না, সে ভাল যা করেছে সে তার সওয়াব পাবে এবং স্বীয় মন্দ কৃতকর্মের জন্য সে নিজেই নিগ্রহ ভোগ করবে। হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা যদি ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তাহলে আমাদেরকে পাকড়াও করো না, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের আগের লোকেদের উপর যেমন গুরু-দায়িত্ব অর্পণ করেছিলে, আমাদের উপর তেমন দায়িত্ব অর্পণ করো না; হে আমাদের প্রতিপালক! যে ভার বহনের ক্ষমতা আমাদের নেই, এমন ভার আমাদের উপর চাপিয়ে দিও না, (ভুল-ত্রুটি উপেক্ষা করে) আমাদেরকে রেহাই দাও, আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর; তুমিই আমাদের প্রতিপালক, কাজেই আমাদেরকে কাফিরদের উপর জয়যুক্ত কর। (২৮৬)

---

সুরা আলে ইমরান

আল্লাহ সাক্ষ্য দেন যে, তিনি ছাড়া সত্যিকার কোন ইলাহ নেই এবং ফেরেশতাগণ ও ন্যায়নীতিতে প্রতিষ্ঠিত জ্ঞানীগণও (সাক্ষ্য দিচ্ছে যে,) তিনি ছাড়া সত্যিকার কোন ইলাহ নেই, তিনি মহাপরাক্রান্ত, মহাজ্ঞানী। (১৮)

নিশ্চয় আল্লাহর নিকট একমাত্র দ্বীন হল ইসলাম। বস্তুতঃ যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিল তারা জ্ঞান লাভের পর একে অন্যের উপর প্রাধান্য লাভের জন্য মতভেদ সৃষ্টি করেছে এবং যে ব্যক্তি আল্লাহর নিদর্শনসমূহ্কে অস্বীকার করবে, (সে জেনে নিক) নিশ্চয়ই আল্লাহ হিসাব গ্রহণে অতিশয় তৎপর। (১৯)

---

সুরা আল-আ’রাফ

তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ যিনি ছয় দিনে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর আরশে সমুন্নত হয়েছেন। দিনকে তিনি রাতের পর্দা দিয়ে ঢেকে দেন, তারা একে অন্যকে দ্রুতগতিতে অনুসরণ করে এবং সূর্য, চন্দ্র, তারকারাজি তাঁরই আজ্ঞাবহ। জেনে রেখ, সৃষ্টি তাঁর, হুকুমও (চলবে) তাঁর, বরকতময় আল্লাহ বিশ্বজগতের প্রতিপালক। (৫৪)

তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে বিনয়ের সঙ্গে এবং গোপনে আহবান কর, তিনি সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না। (৫৫)

শান্তি-শৃঙ্খলা স্থাপিত হওয়ার পর পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না, আর তাঁকে ভয়-ভীতি ও আশা-ভরসা নিয়ে ডাকতে থাক, আল্লাহর দয়া তো (সব সময়) তাদের নিকটে আছে যারা সৎ কাজ করে। (৫৬)

আমি মূসার কাছে ওয়াহী করলাম, ‘তোমার লাঠি ছুঁড়ে দাও’। তখন তা তাদের অলীক বস্তুগুলোকে গ্রাস করতে শুরু করল। (১১৭)

প্রকৃত সত্য প্রকাশ হয়ে গেল, তারা যা সাজিয়েছিল তা নিস্ফল হয়ে গেল। (১১৮)

তারা সেখানে পরাজিত হল আর লাঞ্ছিত অবস্থায় ফিরে গেল। (১১৯)

আর যাদুকররা সাজদায় লুটিয়ে পড়ল। (১২০)

তারা বলল, ‘আমরা বিশ্বজগতের প্রতিপালকের প্রতি ঈমান আনলাম। (১২১)

মূসা আর হারূনের প্রতিপালকের প্রতি।’ (১২২)

---

সুরা ইউনুস

তারা যখন নিক্ষেপ করল, তখন মূসা বলল, ‘‘তোমরা যা নিয়ে এসেছ তাতো যাদু, আল্লাহ এখনই তা ব্যর্থ করে দেবেন, আল্লাহ বিশৃঙ্খলাকারীদের কাজকে সংশোধন করেন না’’। (৮১)

আল্লাহ তাঁর বাণীর সাহায্যে প্রকৃত সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করবেনই, অপরাধীদের কাছে তা যতই অপ্রীতিকর হোক না কেন। (৮২)

---

সুরা ত্বা-হা

তোমার ডান হাতে যা আছে তা নিক্ষেপ কর, তারা যা করেছে এটা তা সব গিলে ফেলবে, তারা যা করেছে তাতো কেবল যাদুকরের কলা-কৌশল। যাদুকর যে রূপ ধরেই আসুক না কেন, সফল হবে না।’ (৬৯)

সুরা আল-মু’মিনূন

তোমরা কি ভেবেছিলে যে, আমি তোমাদেরকে তামাশার বস্তু হিসেবে সৃষ্টি করেছি আর তোমাদেরকে আমার কাছে ফিরিয়ে আনা হবে না? (১১৫)

সুউচ্চ মহান আল্লাহ যিনি প্রকৃত মালিক, তিনি ছাড়া সত্যিকারের কোন ইলাহ নেই, সম্মানিত আরশের অধিপতি। (১১৬)

যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে অন্য ইলাহকেও ডাকে, এ ব্যাপারে তার কাছে কোন দলীল প্রমাণ নেই, একমাত্র তার প্রতিপালকের কাছেই তার হিসাব হবে, কাফিরগণ অবশ্যই সফলকাম হবে না। (১১৭)

কাজেই বল : ‘হে আমার প্রতিপালক! ক্ষমা কর ও রহম কর, তুমি রহমকারীদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ।’ (১১৮)

---

সুরা আস-সাফফাত

শপথ তাদের যারা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো, (১)

অতঃপর যারা ধমক দিয়ে তিরস্কার করে তাদের শপথ, (২)

আর যারা (আল্লাহর) যিকর আবৃত্তিতে লিপ্ত, (৩)

তোমাদের প্রকৃত ইলাহ অবশ্য একজন। (৪)

যিনি আসমান, যমীন আর এ দু’য়ের মাঝে যা আছে এবং সকল উদয় স্থলের মালিক। (৫)

আমি নিকটবর্তী আসমানকে তারকারাজির সৌন্দর্য দ্বারা সুশোভিত করেছি, (৬)

আর (এটা করেছি) প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়ত্বান থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থা হিসেবে। (৭)

যার ফলে তারা উচ্চতর জগতের কিছু শুনতে পারে না, চতুর্দিক থেকে তাদের প্রতি নিক্ষেপ করা হয় (উল্কাপিন্ড) (৮)

(তাদেরকে) তাড়ানোর জন্য। তাদের জন্য আছে বিরামহীন শাস্তি। (৯)

তবে কেউ ছোঁ মেরে কিছু শুনে ফেললে জ্বলন্ত উল্কাপিন্ড তার পিছু নেয়। (১০)

---

সুরা আল-আহক্বাফ

স্মরণ কর, যখন জ্বিনদের একটি দলকে তোমার প্রতি ফিরিয়ে দিয়েছিলাম যারা কুরআন শুনছিল। তারা যখন সে স্থানে উপস্থিত হল, তখন তারা পরস্পরে বলল- চুপ করে শুন। পড়া যখন শেষ হল তখন তারা তাদের সম্প্রদায়ের কাছে ফিরে গেল সতর্ককারীরূপে। (২৯)

(ফিরে গিয়ে) তারা বলল- হে আমাদের সম্প্রদায়! আমরা একটি কিতাব (এর পাঠ) শুনেছি যা মূসার পরে অবতীর্ণ হয়েছে, তা পূর্বেকার কিতাবগুলোর সত্যতা প্রতিপন্ন করে, সত্যের দিকে আর সঠিক পথের দিকে পরিচালিত করে। (৩০)

হে আমাদের সম্প্রদায়! আল্লাহর দিকে আহবানকারীর প্রতি সাড়া দাও এবং তার প্রতি ঈমান আন, আল্লাহ তোমাদের গুনাহ মাফ করে দেবেন আর তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক ‘আযাব থেকে রক্ষা করবেন। (৩১)

আর যে আল্লাহর দিকে আহবানকারীর প্রতি সাড়া দিবে না, দুনিয়াতে সে আল্লাহকে ব্যর্থ করতে পারবে না, আর আল্লাহকে বাদ দিয়ে নেই তার কোন সাহায্যকারী, পৃষ্ঠপোষক। তারা আছে সুস্পষ্ট গুমরাহীতে। (৩২)

---

সুরা আর-রাহমান

হে জ্বিন ও মানুষ জাতি! তোমরা যদি আকাশ ও পৃথিবীর সীমানা অতিক্রম করতে পার তাহলে অতিক্রম কর, কিন্তু (আল্লাহর) প্রমাণপত্র ছাড়া তোমরা তা অতিক্রম করতে পারবে না। (৩৩)

অতএব (হে জ্বিন ও মানুষ!) তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ কোন্ নি‘মাতকে অস্বীকার করবে? (৩৪)

(অতিক্রম করতে চাইলে) তোমাদের দিকে আগুনের শিখা ও ধোঁয়া ছেড়ে দেয়া হবে, তখন তোমরা তা প্রতিরোধ করতে পারবে না। (৩৫)

অতএব (হে জ্বিন ও মানুষ!) তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ কোন্ নি‘মাতকে অস্বীকার করবে? (৩৬)

---

সুরা আল-হাশর

আমি যদি এ কুরআনকে পাহাড়ের উপর অবতীর্ণ করতাম, তাহলে তুমি আল্লাহর ভয়ে তাকে বিনীত ও বিদীর্ণ দেখতে। এ সব উদাহরণ আমি মানুষের জন্য বর্ণনা করি যাতে তারা (নিজেদের ব্যাপারে) চিন্তা-ভাবনা করে। (২১)

তিনিই আল্লাহ, যিনি ছাড়া সত্যিকারের কোন ইলাহ নেই, অদৃশ্য ও দৃশের জ্ঞানের অধিকারী, পরম দয়াময়, পরম দয়ালু। (২২)

তিনিই আল্লাহ যিনি ছাড়া সত্যিকারের কোন ইলাহ নেই, তিনিই বাদশাহ, অতি পবিত্র, পূর্ণ শান্তিময়, নিরাপত্তা দানকারী, প্রতাপশালী, পর্যবেক্ষক, মহা পরাক্রমশালী, অপ্রতিরোধ্য, প্রকৃত গর্বের অধিকারী। তারা যাকে (তাঁর) শরীক করে তাত্থেকে তিনি পবিত্র, মহান। (২৩)

তিনিই আল্লাহ সৃষ্টিকারী, উদ্ভাবনকারী, আকার আকৃতি প্রদানকারী। সমস্ত উত্তম নামের অধিকারী। আসমান ও যমীনে যা আছে সবই তাঁর গৌরব ও মহিমা ঘোষণা করে। তিনি প্রবল পরাক্রান্ত মহা প্রজ্ঞাবান। (২৪)

---

সুরা আল-জ্বীন

বল, ‘‘আমার কাছে ওয়াহী করা হয়েছে যে, জিন্নদের একটি দল মনোযোগ দিয়ে (কুরআন) শুনেছে অতঃপর তারা বলেছে ‘আমরা এক অতি আশ্চর্যজনক কুরআন শুনেছি (১)

যা সত্য-সঠিক পথ প্রদর্শন করে, যার কারণে আমরা তাতে ঈমান এনেছি, আমরা কক্ষনো কাউকে আমাদের প্রতিপালকের অংশীদার গণ্য করব না। (২)

আর আমাদের প্রতিপালকের মর্যাদা অতি উচ্চ, তিনি গ্রহণ করেননি কোন স্ত্রী আর কোন সন্তান। (৩)

আর আমাদের মধ্যেকার নির্বোধেরা তাঁর সম্পর্কে সীমাতিরিক্ত কথাবার্তা বলত। (৪)

আর আমরা ধারণা করতাম যে, মানুষ ও জ্বিন আল্লাহ সম্পর্কে কক্ষনো মিথ্যে কথা বলবে না। (৫)

আরো এই যে, কতক মানুষ কতক জ্বিনের আশ্রয় নিত, এর দ্বারা তারা জ্বিনদের গর্ব অহঙ্কার বাড়িয়ে দিয়েছে। (৬)

আরো এই যে (জ্বিনেরা বলেছিল) তোমরা (জ্বিনেরা) যেমন ধারণা করতে তেমনি মানুষেরা ধারণা করত যে, (মৃত্যুর পর) আল্লাহ কাউকে পুনরুত্থিত করবে না। (৭)

আর আমরা আকাশের খবর নিতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমরা সেটাকে পেলাম কঠোর প্রহরী বেষ্টিত ও জ্বলন্ত উল্কাপিন্ডে পরিপূর্ণ। (৮)

আমরা (আগে) সংবাদ শুনার জন্য আকাশের বিভিন্ন ঘাঁটিতে বসতাম, কিন্তু এখন কেউ সংবাদ শুনতে চাইলে তার উপর নিক্ষেপের জন্য সে জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ডকে লুকিয়ে থাকতে দেখে। (৯)

---

সুরা আল-ইখলাস

বল, তিনি আল্লাহ, এক অদ্বিতীয়, (১)

আল্লাহ কোন কিছুর মুখাপেক্ষী নন, সবই তাঁর মুখাপেক্ষী, (২)

তিনি কাউকে জন্ম দেন না, আর তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি। (৩)

তাঁর সমকক্ষ কেউ নয়। (৪)

---

সুরা আল-ফালাক

বল, ‘আমি আশ্রয় চাচ্ছি সকাল বেলার রব-এর, (১)

তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট হতে, (২)

আর অন্ধকার রাতের অনিষ্ট হতে যখন তা আচ্ছন্ন হয়ে যায়। (৩)

এবং (জাদু করার উদ্দেশ্যে) গিরায় ফুৎকারকারিণীদের অনিষ্ট হতে, (৪)

এবং হিংসুকের অনিষ্ট হতে, যখন সে হিংসা করে। (৫)

---

সুরা আন-নাস

বল, ‘আমি আশ্রয় চাচ্ছি মানুষের প্রতিপালকের, (১)

মানুষের অধিপতির, (২)

মানুষের প্রকৃত ইলাহর, (৩)

যে নিজেকে লুকিয়ে রেখে বার বার এসে কুমন্ত্রণা দেয় তার অনিষ্ট হতে, (৪)

যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে (৫)

(এই কুমন্ত্রণাদাতা হচ্ছে) জিন্নের মধ্য হতে এবং মানুষের মধ্য হতে। (৬)

---

পরিশেষে বলা যায়, রুকইয়া একটি আধ্যাত্মিক চিকিৎসা, যা আমাদের ঈমানকে শক্তিশালী করে। এই আয়াগুলো তিলাওয়াতের পাশাপাশি আল্লাহর কাছে একনিষ্ঠভাবে দোয়া করা জরুরি। মনে রাখবেন, রুকইয়ার মূল উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর উপর ভরসা রেখে তাঁর কালামের মাধ্যমে আরোগ্য কামনা করা। আল্লাহ যেন আমাদের সকল বিপদ থেকে রক্ষা করেন এবং সুস্থ জীবন দান করেন, আমীন।